চকরিয়া অফিস:
চকরিয়ায় সরকারি নিয়মে টিকেট নিয়ে দেখাতে গিয়ে উপজেলা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক জামায়াত নেতা মোহামুদুল হকের কাছে লাঞ্চিত হয়েছেন দুই নারী। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের ৫নম্বর কক্ষের বাইরে ঘটেছে এ ঘটনা। ওইসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহামুদুল হক অফিস চলাকালে রোগী না দেখে কৌশলে কক্ষের বাইরে এসে দাঁিড়য়ে খোশগল্প করতে থাকেন। ওইসময় টিকেট নিয়ে রোগী ও আক্রান্ত মহিলারা তার কাছে গেলে তিনি উল্টো তাদের উপর ক্ষেপে যান। ওইসময় তিনি রোগী না দেখে মহিলাদের সাথে অশালীন ভাষায় র্দুব্যবহার করেন। ঘটনার এক পর্যায়ে আক্রান্ত মহিলাদের ধমক দিয়ে হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দেন এই চিকিৎসক।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি হাসপাতালের এই চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের পশ্চিমে সরকারি বাসায় প্রাইভেট চেম্বার খুলে অফিস চলাকালীন সময়ে রীতিমত রোগীদের নিয়ে বাণিজ্য করে আসছেন। প্রতিজন রোগী দেখতে তিনি ৩শত টাকা করে ফি আদায় করেন। হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে তার রয়েছে একাধিক দালাল চক্র। মুলত তাদের মাধ্যমে হাসপাতালে সরকারিভাবে সেবা থেকে আসা রোগীদেরকে দালালদের মাধ্যমে কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে টাকা নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট বাণিজ্য করে আয়ের সিংহভাগ টাকা দিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক মোহামুদুল হক স্থানীয় জামায়াত নেতাদের পরিচালিত একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্টানের শেয়ার হোল্ডার হয়েছেন। এছাড়াও তিনি জামায়াত ইসলামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সুবাদে ওই সংগঠনের বাইতুল মালে নিয়মিত চাঁদা দেন। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসক মোহামুদুল হক সরকারি হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সরকারি কোয়াটারের বাসায় বসে আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে অতৎপরতা চালাতে জামায়াত ও শিবিরের কতিপয় নেতাকর্মীদের উৎসাহ দেন। এমনকি সরকারি কোয়াটারের তার বাসায় সরকার বিরোধী গোপন বৈঠকও করেন।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে চিকিৎসক মোহামুদুল হক দায়িত্ব ফাঁিক দিয়ে প্রায় সময়ই সরকারি কোয়াটারের বাসায় বসে প্রাইভেট চেম্বার করেন। চিকিৎসা নিয়ে টাকা কম দিতে চাইলে রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। প্রতিদিন সকালে হাসপাতালের বেশির ভাগ চিকিৎসক সঠিক সময়ে রোগী দেখতে গেলেও অভিযুক্ত চিকিৎসক মোহামুদুল হক কর্তব্য কাজে ফাঁিক দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রোগী দেখা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসকের হাতে মহিলা লাঞ্চিতের ঘটনাটি তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা.মোহাম্মদ ছাবেরকে জানানো হয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, রোগী ও মহিলাদের সাথে দুর্ব্যবহার করার ঘটনাটি দু:খজনক। তবে তাৎক্ষনিকভাবে ওই চিকিৎসককে নির্দেশ দেওয়া হয় রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে। তবে ওই সময় আক্রান্ত মহিলা ও রোগীরা চলে যাওয়ায় তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন মো.কমর উদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারি নিয়মে অফিস চলাকালে রোগীদের মাঝে চিকিৎসা নিশ্চিত করা সকল চিকিৎসকের কর্তব্য। সেই ক্ষেত্রে কর্তব্য অবহেলা করে ওই চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করার ঘটনাটি মুটেও কাম্য নয়। তিনি বলেন, এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #
পাঠকের মতামত: